মুম্বাইয়ের ভয়াবহ জলপথের ফেরি দুর্ঘটনা চিন্তায় ফেলেছে এই রাজ্যে প্রশাসনকে। জলপথের এই দুর্ঘটনাটি নিয়ে অন্যান্য জলপথগামী অঞ্চলগুলিও নানা রকম প্রশ্ন ওঠাতে শুরু করেছে সুরক্ষা নিয়ে। তেমনই মুম্বাইয়ের দুর্ঘটনার পর কলকাতার হুগলি নদী জলপথের সুরক্ষা নিয়ে নানা রকম প্রশ্ন ওঠাতে শুরু শুরু করেছে। তবে রাজ্যের পরিবহন মন্ত্রী আশ্বস্ত করেছেন যে ভয়ের কোন কারণ নেই। পরিবহন দপ্তর সূত্রে খবর, হুগলি নদীর জল পথে সুরক্ষার জন্য একটি রেসকিউ সুপারভিশন সেন্টার গড়ে তোলার পরিকল্পনা নিয়েছে রাজ্য সরকার।
পরপর বেশ কয়েকটা জলপথে ভয়াবহ দুর্ঘটনার সম্মুখীন হয়েছে মানুষ। যেমন গত বছরের আগস্ট মাসে হাওড়ার শ্যামপুর হলদিয়াগামী একটি জাহাজকে জায়গা দিতে গিয়ে সোজা নদীর পাড়ে গিয়ে ধাক্কা মেরে সিঙ্গাপুরের একটি জাহাজ, তেমনি ভাবে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসেও কুলপির কাছে দুটি জাহাজের মধ্যে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়, গত এপ্রিল মাসেও কিন্তু উত্তরপাড়া ও আড়িয়াদহ ঘাটের মাঝখানে বার্জে ধাক্কা মেরে উল্টে যায় একটি ডিঙি নৌকা।
বর্তমানে হুগলি নদীতে কি কি যানবাহন চলাচল করে
রাজ্য পরিবহন দপ্তরের আধিকারিকদের একাংশ থেকে জানা যাচ্ছে যে মুম্বাইয়ের মত হুগলি নদীতেও অসংখ্য লঞ্চ, স্পিটবোট, ভুটভুটি, দ্বার টানা নৌকো, মালবাহী বার্জ, ক্রুজ, এবং জাহাজ চলাচল করে, এখন হুগলি নদীতে প্রায় বছরে ৭০০ থেকে ৭৫০ টি বার্জ চলে। এছাড়া রয়েছে ছোট ছোট মাছ ধরার নৌকো, ট্রলার এবং ভুটভুটি কিন্তু তাদের সামলানোর জন্য কোন আধুনিক রিভার ট্রাফিক সিস্টেম গড়ে ওঠেনি। তবে এক্ষেত্রে অনেকেই অভিযোগ করছে যে যারা নদীতে লঞ্চ, ভুটভুটি, ক্রুজ এবং বার্জ চালাচ্ছেন তাদের অনেকেই প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত নন এমনকি তাদের লাইসেন্স পর্যন্ত নেই।
হুগলি নদীর জলপথ কারা দেখাশোনা করে
পরিবহন দপ্তরের কর্তারা এই অসুরক্ষিত জলপথের জন্য দায়ী করছেন ‘ইংল্যান্ড ওয়াটার ওয়েজ অথরিটি অফ ইন্ডিয়া কে’। পরিবহন দপ্তরের এক শীর্ষকর্তার ব্যাখ্যা অনুযায়ী হলদিয়া থেকে এলাহাবাদ পর্যন্ত গঙ্গা-ভাগীরথী-হুগলি নদী জলপথের দেখভাল করে কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনস্থ সংস্থা ইংল্যান্ড ওয়াটার ওয়েজ অথরিটি অফ ইন্ডিয়া। তারা সেই দায়িত্ব ঠিকমত পালন করছে না তাতেই অসুরক্ষিত হয়ে পড়ছে হুগলি নদীর জলপথ।
অপরদিকে ইংল্যান্ড ওয়াটার ওয়েজ অথরিটি অফ ইন্ডিয়ার এক আধিকারিক জানান যে হুগলি নদীতে হাজার হাজার জলযান চলে তাদের ওপর সারাক্ষণ নজরদারি করার মত অত লোকবল নেই তাদের। কার লাইসেন্স বৈধ আর কার লাইসেন্স বৈধ নেই সেটা চাইলে পুলিশ অথবা পরিবহন দপ্তর দেখতে চাইতেই পারে এ ব্যাপারে রাজ্য প্রশাসনেরও কিছু দায়িত্ব রয়েছে।
পরিবহন দপ্তরের বক্তব্য
পরিবহন দপ্তরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে কেন্দ্রের ভরসায় না থেকে তারাই জলপথকে সুরক্ষিত রাখতে এক গুচ্ছ ব্যবস্থা নিচ্ছে। জানা যাচ্ছে হুগলি নদীর জলপথের সুরক্ষার জন্য একটি রেসকিউ সুপারভিউ সেন্টার গড়ে তোলার পরিকল্পনা নিয়েছে রাজ্য সরকার। যদি জলপথে কোন জায়গায় দুর্ঘটনা ঘটে তাহলে স্যাটেলাইটের মাধ্যমে এক মুহূর্তের মধ্যে সেখানে খবর চলে যাবে, জলযান পরীক্ষার জন্য চালু হবে মোবাইল চেকিং। তার জন্য আরএফআইডি, ভিডিও প্রসেসিং, ইলেকট্রনিক চ্যানেল চার্ট, সিসিটিভি এবং জিপিএস প্রযুক্তিকে কাজে লাগানো হবে। অন্যদিকে ট্রাফিক সার্জেন্টের মতো হুগলি নদীতেও টহল দেবে নজরদারির টিম।
অমিত ডেইলি খবর বাংলার প্রতিষ্ঠাতা এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা। ৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে তিনি সংবাদ জগতের সঙ্গে যুক্ত। পশ্চিমবঙ্গের এবং ভারতের সংবাদ সাম্প্রতিক ঘটনাবলী নিয়ে সঠিক এবং নির্ভরযোগ্য তথ্য পরিবেশন করতে অমিত সর্বদা উদ্যমী। সংবাদ সংগ্রহ এবং তা পাঠকদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার প্রতি তার আগ্রহ এবং নিষ্ঠা এই প্ল্যাটফর্মকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। সেরা এবং নির্ভুল খবর প্রদানই তার প্রধান লক্ষ্য।