শুক্রবার রাজ্যসভায় একটি প্রশ্নের লিখিত জবাব দিয়েছেন বিদেশ প্রতিমন্ত্রী কীর্তিবর্ধন সিংহ। সেখানে প্রতিবেশী দুই দেশে হিন্দুদের ওপর হিংসার ঘটনা তথ্য তুলে ধরেছেন তিনি। বাংলাদেশের চলতি বছরে হিন্দুদের উপর হিংসার ঘটনা ঘটেছে ২,২০০ টি। আর পাকিস্তানের হিন্দুদের উপর হিংসার ঘটনা ঘটেছে ১১২ টি। বিদেশ মন্ত্রকের দেওয়া বিবৃতিতে বলা হয়েছে যে এই ধরনের ঘটনাগুলোকে গুরুত্ব দিয়ে দেখছেন বিদেশ মন্ত্রক এবং বাংলাদেশ সরকারের কাছে নিজেদের উদ্বেগের কথা জানিয়েছেন। রাজ্যসভায় এই সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় পরিসংখ্যান দিয়েই বিদেশী মন্ত্রক জানিয়েছেন হিন্দুদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার জন্য দুই দেশের সরকারকে লিখেছে নয়াদিল্লি। ভারতের আশা হল বাংলাদেশ সরকার সে দেশে হিন্দু এবং সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য সব রকমের পদক্ষেপ নিবে। ঠিক একই ভাবে পাকিস্তান সরকারের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছে বলে জানান বিদেশ মন্ত্রক। বিবৃতিতে এটাও বলা হয়েছে যে কূটনৈতিক মাধ্যমে হিন্দুদের উপর হিংসার বিষয়টি পাকিস্তান সরকারের কাছে তুলে ধরা হয়েছে। পাকিস্তান সরকারের কাছে অনুরোধ করা হয়েছে যাতে সে দেশে ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা, হিংসা সংখ্যালঘুদের উপর হামলা এবং তাদের নিরাপত্তা এবং সুরক্ষা সুনিশ্চিত করার জন্য।
সংসদে বিদেশ মন্ত্রকের পেশ করা তথ্য বলছে ২০২২ সালে বাংলাদেশের হিন্দুদের ওপর ৪৭ টি অত্যাচারের ঘটনা নথিবদ্ধ হয়েছিল কিন্তু ২০২৩ সালে সেই সংখ্যাটি হয়েছিল ৩০২ এবং ২০২৪ সালের ৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত সেই সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে ২২০০ টি তে। বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছেন যে বাংলাদেশ বা পাকিস্তান ছাড়া ভারতের অন্য কোন প্রতিবেশী দেশে হিন্দু বা সংখ্যালঘুদের ওপর এরকম অত্যাচারের ঘটনা ঘটেনি। এই বিষয় নিয়ে ভারত দুই দেশের সঙ্গে কথা বলেছে। ভারত আশা করছে যে হিন্দু এবং অন্য সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে উপযুক্ত পদক্ষেপ নিশ্চয়ই নিবে বাংলাদেশ।
আগস্ট মাসে বাংলাদেশ থেকে দেশ ছাড়েন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী হাসিনা গণ-আন্দোলনের কারণে। তারপর থেকেই সেখানকার পরিস্থিতি গম্ভীর হয়ে ওঠে এবং দেশের হিন্দু এবং সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার অভিযোগও বেড়ে গিয়েছে। হাসিনার পর বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার হলেন মোহাম্মদ ইউনূস। তার আমলেই সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাস কে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় গ্রেফতার করে চট্টগ্রাম পুলিশ, এর ফলেই ভারত এবং বাংলাদেশের হিন্দুদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়। ৯ ডিসেম্বর বিদেশ সচিব বাংলাদেশে গিয়েছিল কথা বলতে এবং সেখানে একটি বৈঠক হয়। সেই বৈঠকেই সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি এবং তিনি জানান বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্তি সরকারের সঙ্গেই আগের মতই সুসম্পর্ক চায় ভারত।