বাংলাদেশের একটি ছবি ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। সেখানে দেখা যাচ্ছে দেশের স্বাধীনতার জন্য লড়াই করা এক ব্যক্তিকে প্রকাশ্যে হেনস্তা করা হচ্ছে। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে তার অবদানের জন্য দেওয়া হয়েছিল ‘বীর প্রতীক’ খেতাব। আর সেই ব্যক্তি যার নাম আব্দুল হাই কেন তাকে নাকি পড়ানো হল গলায় জুতোর মালা! শুধু তাই নয় এই অবস্থায় তাকে পুরো এলাকা ঘুরে ঘুরে এলাকাবাসীর কাছে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করা হয়। এরকম একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচুর ভাইরাল হয়েছে যদিও সেই ভিডিওর সত্যতা যাচাই করেনি ‘ডেইলি খবর বাংলা’।
জানা যাচ্ছে যে, হেনস্তায় মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন সেই ব্যক্তি। ব্যক্তির বয়স ৭৮ বছর। ৭৮ বছর বয়সী মুক্তিযোদ্ধাকে শারীরিক এবং মানসিকভাবে হেনস্থা করায় সোশ্যাল মিডিয়ায় নিন্দার ঝড় উঠেছে।
সেই মুক্তিযোদ্ধা কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের বাতিসা ইউনিয়নের লুদিয়ারা গ্রামের বাসিন্দা। গত ১৬ তারিখেই পালিত হয়েছে বিজয় দিবস। তাকে হেনস্থা করার এক মিনিট ৪৬ সেকেন্ডের একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে রবিবার রাতে। রবিবারে এই মুক্তিযোদ্ধার গলায় জুতোর মালা পড়িয়ে হেনস্থা করার অভিযোগ উঠেছে, জানা গিয়েছে কুলিয়ারা প্রাইমারি স্কুলের সামনে এই ঘটনাটি ঘটেছে।
আওয়ামী লিগের দাবি
আওয়ামী লীগ দাবি করছে যে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস মুছে দিতে চাইছে নতুন সরকার ইউনুসের সরকার। এই কারণেই সেই ব্যক্তিকে জুতোর মালা পরিয়ে গোটা এলাকা ঘুরতে হয়েছে এবং হাতজোড় করে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করা হয়েছে। তবে সেই মুক্তিযোদ্ধার পরিবারের অভিযোগ যে যারা তাকে হেনস্থা করেছে তারা সবাই জামায়াত শিবিরের লোকজন। এমনকি তাকে নাকি এলাকা ছাড়তেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে তাদের অভিযোগ। এই হেনস্তার পর মুক্তিযোদ্ধা মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে যাওয়ার পরে তাকে বেসরকারি একটি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে যে এই ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।
স্থানীয় সূত্রে খবর
স্থানীয় সূত্রে খবর অনুযায়ী জানা গিয়েছে যে এই মুক্তিযোদ্ধা কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য। এর আগে প্রায় ৮ বছর এলাকা ছাড়া ছিলেন তিনি। স্থানীয়রা বলছেন যে রবিবার দুপুরে একা পেয়ে তার গলায় জুতোর মালা পরিয়ে দেওয়া হয় তারপর এলাকার জামায়াত নেতা আব্দুল হাশেমের নেতৃত্বে কয়েকজন ওই মুক্তিযোদ্ধাকে হেনস্থার পাশাপাশি হুমকিও দেওয়া হয় এবং হেনস্থাকারীদের হুমকির জন্যই প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে বাধ্য হোন তিনি।
সংবাদ পত্রিকার খবর অনুযায়ী, ওই মুক্তিযোদ্ধা জানিয়েছেন যে তাকে একলা পেয়ে জুতোর মালা জোর করে পরিয়ে দিয়ে ছবি ও ভিডিও করা হয়। যারা তাকে হেনস্থা করেছে তারা সবাই জামায়াত শিবিরের লোকজন বলেও দাবি করেন তিনি। তিনি এই প্রশ্ন করেন যে এজন্যই কি আমি জীবন বাজি রেখে দেশের জন্য যুদ্ধ করেছিলাম?
অপরদিকে চৌদ্দগ্রাম উপজেলা জামায়াতের আমির মাহফুজুর রহমান জানিয়েছেন ওই মুক্তিযোদ্ধাকে হেনস্তার সঙ্গে যদি দলের কেউ জড়িত থাকে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।