কেন্দ্রের শিক্ষানীতিতে আসতে চলেছে বড় বদল। কারণ কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়, ‘জওহর নবোদয় বিদ্যালয়’ সহ কেন্দ্র পরিচালিত সমস্ত স্কুলগুলিতে অষ্টম ও পঞ্চম শ্রেণীতে ফিরছে পাশ ফেল। চলতি শিক্ষাবর্ষ থেকে সেসব স্কুলে এই নিয়ম চালুর অনুমতি দিয়েছে কেন্দ্র। প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের অধীনস্থ সৈনিক স্কুলগুলি এবং আদিবাসী বিষয়ক মন্ত্রকের অধীনস্থ ‘একলব্য মডেল আবাসিক স্কুল’ গুলি সহ সারাদেশ মিলিয়ে প্রায় ৩,০০০ কেন্দ্রীয় স্কুল রয়েছে।
নতুন নির্দেশিকা
কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রক গত সপ্তাহের একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে যেখানে শিশুদের বিনামূল্যে এবং বাধ্যতামূলক শিক্ষার অধিকার বিধিমালা ২০১০ সংশোধন করেছে। নয়া নির্দেশ অনুযায়ী শিক্ষাবর্ষের শেষে নিয়মিত পরীক্ষায় যদি পঞ্চম বা অষ্টম শ্রেণীর কোন শিক্ষার্থী পাস করতে না পারে তাহলে তাকে ফলাফল প্রকাশের দুই মাস পর তাকে আবারো পরীক্ষায় বসার সুযোগ দেওয়া হবে। অর্থাৎ শিক্ষার্থীকে ফেল করিয়ে দেওয়া হবে কিন্তু প্রাথমিক শিক্ষা শেষ না হওয়া পর্যন্ত কোনো শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা যাবে না বলে উল্লেখ করা হয়েছে নতুন বিধিমালায়।
এখানে আরো বলা হয়েছে যে , কোন শিক্ষার্থী যদি ফেল করে শিক্ষার্থীর পাশাপাশি তার বাবা-মাকেও গাইড করবেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা। বাবা মাদেরকে বোঝাবে এবং পরামর্শ দেবে যে শিক্ষার ক্ষেত্রে কোথায় ফাঁক থেকে যাচ্ছে। স্কুলের প্রধান শিক্ষক মহাশয়ের কাছে ফেল করা শিক্ষার্থীদের একটি তালিকা রাখতে হবে যাতে করে শিক্ষার্থীদের অগ্রগতি ব্যক্তিগতভাবে তিনি পর্যবেক্ষণ করতে পারে।
এই সিদ্ধান্তের কারণ
শিক্ষার্থীদের পাশ ফেল নিষিদ্ধ করা হয়েছিল ‘শিক্ষার অধিকার আইন, ২০০৯’- এর ১৬ নম্বর ধারায়। যেখানে কেন্দ্র পরিচালিত স্কুলগুলোতে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পাশ ফেল উঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল। যাতে করে শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা মাঝপথে ছেড়ে না দেয়, তারা যেন ন্যূনতম শিক্ষা পায় তা নিশ্চিত করতেই এই নীতি নেওয়া হয়েছিল। একটু পরবর্তী সময় দেখা যাচ্ছে যে পাশ ফেল না থাকার ফলে শিক্ষার্থীরা পড়াশোনাকে গুরুত্ব দিচ্ছে না, এই দাবি করেই ২০১৬ সালে এই নীতি বাতিল করার দাবি জানিয়েছিল ‘সেন্ট্রাল অ্যাডভাইজরি বোর্ড অফ এডুকেশন (CABE)’।
তারপরে ২০১৯ সালে সে শিক্ষার আইন সংশোধন করে বলা হয়েছিল পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণীতে শিক্ষার্থীদের পাশ ফেল এর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারবে উপযুক্ত সরকার। মোটকথা এই বিষয়টি নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা ছাড়া হয়েছিল রাজ্যগুলির হাতে। ঠিক এরপর থেকে আঠারোটি রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল পুনরায় পাশ ফেল চালু করেছে যার মধ্যে নাম রয়েছে আসাম, বিহার, গুজরাট, হিমাচল প্রদেশ, জম্মু ও কাশ্মীর, ঝাড়খন্ড, মধ্যপ্রদেশ, মেঘালয়, নাগাল্যান্ড, পাঞ্জাব, রাজস্থান, সিকিম, তামিলনাড়ু, ত্রিপুরা, উত্তরাখণ্ড, পশ্চিমবঙ্গ, দিল্লী, দাদরা, ও নগর হাভেলি এবং দমন ও দিউ। তবে আবার কেন্দ্রশাসিত স্কুল গুলোতে নতুন নিয়ম চালু করা হবে নতুন শিক্ষাবর্ষ থেকে।