চীন হাই-স্পিড ট্রেন প্রযুক্তি ক্ষেত্রে এক ধাপ এগিয়ে গোটা বিশ্বের মধ্যে। রবিবার তিন তাদের সর্বশেষ আপডেটেড বুলেট ট্রেনের মডেল চালু করেছে, যার গতি পরীক্ষামূলকভাবে ঘন্টায় ৪৫০ কিলোমিটারে পৌঁছেছে। তবে চীনের নির্মাতাদের দাবি এটি বিশ্বের দ্রুততম উচ্চ গতির ট্রেন হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে। এই মডেলটির নাম দিয়েছে CR450 প্রোটোটাইপ।
উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার
চীন স্টেট রেলওয়ে গ্রুপের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী এই নতুন মডেলের ট্রেনটি ভ্রমণের সময়সীমা উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়ে আনবে। তবে সরকারি সংবাদ সংস্থা সিনহুয়া জানিয়েছেন, পরীক্ষার সময় ট্রেনটি ঘন্টায় 450 কিলোমিটার গতিতে পৌঁছাতে সক্ষম হয়েছে পাশাপাশি এর অপারেটিং গতি, শক্তি সাশ্রয়, অভ্যন্তরীণ শব্দের মাত্রা এবং ব্রেকিং সিস্টেমের উন্নত প্রযুক্তি ট্রেনটির কর্মদক্ষতাকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে। বর্তমানে যে ট্রেন পরিষেবা রয়েছে তার সর্বোচ্চ গতি ঘন্টায় ৩৫০ কিলোমিটার, কিন্তু নতুন এই উচ্চ গতি ট্রেন তার থেকেও বেশি দ্রুতগামী।
চীনের হাই স্পিড রেল নেটওয়ার্ক
চীনের তৈরি হাই স্পিড রেল নেটওয়ার্ক বর্তমানে বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে বিস্তৃত। সরকারি তথ্য অনুযায়ী এই নেটওয়ার্কের মোট দৈর্ঘ্য প্রায় ৪৭ হাজার কিলোমিটার। এটি দেশের প্রধান শহরগুলিকে সংযুক্ত করেছে এবং ভ্রমণের সময় উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়েছে। চীন দাবি করেছে যে এইচএসআর নেটওয়ার্কের দেশের অর্থনৈতিক এবং সামাজিক উন্নয়নের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
উন্নত কানেক্টিভিটি
চিনের তৈরি নতুন মডেলটি বর্তমানে লাইন পরীক্ষার বিভিন্ন পর্যায়ে রয়েছে। অপটিমাইজেশন করা হবে যাতে এটি যত দ্রুত সম্ভব বাণিজ্যিক পরিষেবার অন্তর্ভুক্ত হতে পারে।
আন্তর্জাতিক প্রসার
চীনের এই এইচএসআর প্রযুক্তি এখন আন্তর্জাতিক স্তরেও প্রসারিত হয়েছে। তার মধ্যে থাইল্যান্ড এবং ইন্দোনেশিয়ার পাশাপাশি সার্বিয়ার বেলগ্রেড- নোভি স্যাড রেলপথেও এই প্রযুক্তি ব্যবহৃত হচ্ছে। তবে অভ্যন্তরীণ গবেষণা অনুযায়ী বেইজিং সাংহাই রুটটি সবচেয়ে লাভজনক হলেও অন্যান্য রুটগুলি এখনো লাভের মুখ দেখেনি।
চীনের তৈরি CR450 প্রোটোটাইপের উন্নয়ন চীনের উচ্চগতির ট্রেন প্রযুক্তিতে নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছে। এটি শুধু দেশের পরিবহন ব্যবস্থাকে আরো দ্রুত ও কার্যকর করবে না বরং বিশ্বের হাই স্পিড রেল প্রযুক্তিতে চীনের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করবে। তবে চলতি বছরের মধ্যেই এই ট্রেন বাণিজ্যিকভাবে চালু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। এর ফলে ভ্রমণকারীরা যেমন দ্রুত তাদের গন্তব্যস্থলে পৌঁছাতে পারবে তেমনি আরামদায়ক পরিষেবা উপভোগ করতে পারবে।