সুমি রায়, কলকাতা: কদিন থেকে খবরের শিরোনামে বারবার উঠে আসছে প্রাক্তন মন্ত্রী অখিল গিরি ও বিধায়ক উত্তম বারিকের বিবাদ। আসলে কাথি সমবায় ব্যাংকের বোর্ড অফ ডিরেক্টর নির্বাচন নিয়ে তৃণমূল অন্দরে দুই মন্ত্রীর মধ্যে বেধেছে বেশ বিতর্ক। এই বিবাদের জেরে মঙ্গলবার সকালে অখিল গিরিকে চোর চোর বলে তাড়া করেন বিধায়ক উত্তম বারিকের অনুগামীরা। এর ফলে পাল্টা উত্তম বারিকের অনুগামীদের বোমা মারার হুমকি দেন অখিল গিরি। এতে আরো সমস্যা বড় আকার ধারণ করে, এর ফলে অস্বস্তিতে পড়ে যায় শাসক দল তৃণমূল। এবার সেই সমস্যা নিয়েই দুই মন্ত্রীর প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
[the_ad id=”11545″]
দুই বিধায়ককে কঠোর হুঁশিয়ারি
কদিন ধরেই অখিল গিরি এবং উত্তম বারিকের বিবাদ চলছিল, তবে মঙ্গলবারে তাদের সমস্যা বড় আকার ধারণ করলে সেই রাতেই সেই ঘটনায় হস্তক্ষেপ করেন তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব। দলের রাজ্য সভাপতি পূর্ব মেদিনীপুর জেলা তৃণমূলের নেতাদের ফোন করে ডেকে পাঠান এরপর গতকাল অর্থাৎ বুধবার দুপুরে সুব্রত দক্ষিণ কলকাতায় তার প্রিয়নাথ মল্লিক রোডের অফিসে বৈঠকে বসেন জেলার নেতাদের নিয়ে। আর সেই মিটিং এই রাজ্য সভাপতির ফোনে ফোন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং দুই মন্ত্রীর বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি দেন।
কতদিন দলের নেত্রী থাকবেন মমতা?
সূত্রের খবর অনুযায়ী জানা যায় এদিন দলের জাতীয় কর্ম সমিতির বৈঠকে হাজির সমস্ত নেতাদের উদ্দেশ্যে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান শীঘ্রই পারস্পরিক দ্বন্দ্ব যেন মিটিয়ে নেন অখিল গিরি এবং উত্তম বারিক। তিনি আরো বলেন যে দলের সকলকে নির্দেশ মেনে সবসময় কাজ করতে হবে। তিনি যে এই ঘটনায় কতটা ক্ষুব্ধ তাও তিনি পদে পদে বুঝিয়ে দিয়েছেন এবং দুই বিধায়ককে সঙ্গে পার্সোনালি ফোন করেও কথা বলেছেন। তিনি সুব্রত বক্সির ফোনে ফোন করে বলেন আমি দলের চেয়ার পার্সন। তাই আগামী 10 বছর আমি দল চালাবো। সুতরাং দল যে নিয়ম ঠিক করে দেবে সেই প্যানেল অনুযায়ী সবাইকে মেনে চলতে হবে। এর থেকে বোঝা যায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের নেত্রী হিসেবে আর ১০ বছরই থাকবেন।
অন্যদিকে ওই বৈঠকে রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী মনে করিয়ে দেন গত বছর কালীঘাটের বৈঠকে বলা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথা গুলি। সে সময় মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন যে এবার থেকে দল বিরোধী কাজ করলে সংশ্লিষ্ট নেতাকে শোকজের মুখে পড়তে হবে। যদি কোন নেতা পরপর তিনবার শোকজের মুখে পড়ে তাহলে তাকে বহিষ্কার করা হবে। বিধায়দের এই দ্বন্দ্ব দেখে অনেকের মনে প্রশ্ন উঠছে তাহলে কি দলের নেতৃত্ব মানতে চাইছে না দলের নেতারা?
অন্যদিকে কটাক্ষ করতে ছাড়ছে না বিজেপি দলের লোকেরা। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নিজের দলের লোকের দ্বন্দ্ব নিয়ে বিজেপি কটাক্ষ করে জন্যই আগেই দলের হয়ে তোলাবাজির ক্ষমতা ভাইপো অভিষেককে দিয়ে দিয়েছেন মমতা। তবে ভাইপো সেই ক্ষমতা নিয়ে সন্তুষ্ট নয়, তার মনে হয় ক্ষমতাও চাই। তাই এমনই বিবাদের জেরে পড়তে হচ্ছে দলনেত্রী মমতাকে।