অমিত সরকার, কলকাতা: আজ হবে আরজিকর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তরুনী চিকিৎসাকে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার দোষীর বিচার। আরজিকরে এক মহিলা চিকিৎসকের দেহ উদ্ধার হয়েছিল 9 আগস্ট। তারপর ১০ই আগস্ট সেই ঘটনার দোষী সাব্যস্ত করে সঞ্জয় রায়কে হেফাজতে নেন পুলিশ। তারপর থেকেই শুরু হয় নানারকম সঠিক তথ্য উদ্ধারের কাজ। তবে শনিবারে দোষী সাব্যস্ত হয়েছে সঞ্জয় রায়। সোমবার অর্থাৎ আজ তার বক্তব্য শুনে শিয়ালদা আদালতে বিচারক অনির্বাণ দাস শাস্তি ঘোষণা করবেন। ভারতীয় ন্যায় সংহীতার ৬৪ (ধর্ষণ), ৬৬ (ধর্ষণ জনিত আঘাতের কারণে মৃত্যু), ১০৩ (১) (খুন) ধারায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছে সঞ্জয় রায়।
তবে এই সঞ্জয় রায়ের বিরুদ্ধে বিভিন্ন আইনজীবী মহলের একাংশের কথায় এখানে সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি উঠেছে। এই ঘটনা নাকি বিরলতম। ফলে সঞ্জয় কে কি শাস্তি দেওয়া হবে তা অনুমান করা সম্ভব নয়। তবে সঞ্জয়কে আগেই বিচারক জানিয়ে দিয়েছেন যে খুন ও ধর্ষণের মামলায় দোষের সর্বোচ্চ সাজা ফাঁসি এবং সর্বনিম্ন সাজা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। তবে আজ সোমবার সঞ্জয়ের ঠিক কি শাস্তি হবে সেটাই দেখার জন্য সকলে এখন বসে রয়েছে।
আদালত চত্বর
আর সোমবার আরজিকর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে তরুনী চিকিৎসা কে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছে সঞ্জয় রায়, তার ওই শাস্তি ঘোষণা করবেন শিয়ালদা আদালতের বিচারক অনির্বাণ দাস। সেই জন্য আজ সকাল থেকেই কড়া নিরাপত্তা রয়েছে শিয়ালদা আদালত চত্বরে। সেখানে মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ। আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে এই মামলার বিচার চলাকালীন খুন ও ধর্ষণের ঘটনায় সমস্ত বায়োলজিক্যাল রিপোর্ট পর্যবেক্ষণ করেছিল বিচারক। এক্ষেত্রে সঞ্জয় সহ ৫১ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছিল। সমস্ত তথ্য ও প্রমাণ খুটিয়ে দেখেছেন বিচারক। আজ ১৬৪ দিন পর সেই ধর্ষণ ও খুনের মামলার দোষী সাব্যস্তকে শাস্তি দেওয়া হবে আদালতের পক্ষ থেকে।
আসলে গত বছর আগস্ট মাসের ৯ তারিখ এ আরজিকর মেডিকেল কলেজ এবং হাসপাতালে এক মহিলা চিকিৎসকের মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছিল মেডিসিন বিভাগের সেমিনার রুম থেকে। সেখানে থাকে ধর্ষণ করে হত্যার অভিযোগ ওঠে। এরপর কলকাতা পুলিশ ঘটনার তদন্ত নেমে ১০ই আগস্ট গ্রেফতার করেছিল সিভিক ভলেন্টিয়ার সঞ্জয় রায়কে। এরপর এই মামলা কিনারা করার জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতা পুলিশকে সাত দিনের ডেডলাইন দেন। কলকাতা পুলিশ যখন ৭ দিনে এই মামলা সমাধান করতে ব্যর্থ হয় তখন কলকাতা হাইকোর্ট এই মামলা তুলে দেয় সিবিআই এর হাতে।
সেক্ষেত্রে ২৫ টি সদস্যের টিম তৈরি করে তদন্ত শুরু হয়েছিল। এরপর প্রমাণ লোপাট করার জন্য গ্রেফতার করা হয়েছিল প্রাক্তন অধ্যক্ষ সঞ্জীব ঘোষ এবং টালা থানার প্রাক্তন ওসি অভিজিৎ মন্ডলকে। পরে পরবর্তীতে এই মামলায় জামিন পেয়ে যান দুজনেই কারণ তিন মাসের মধ্যে সিবিআই তাদের বিরুদ্ধে কোন চার্জশিট জমা দিতে পারেনি। তবে সন্দীপ আর্থিক দুর্নীতি সংক্রান্ত মামলার জন্য এখনো জামিন পায়নি তিনি জেলেই রয়েছেন।
এই আরজি কর কাণ্ড গোটা দেশকে নাড়িয়ে দিয়েছিল। দেখা গিয়েছিল নানা জায়গায় মিছিল। এমনকি চিকিৎসকরাও কর্মবিরতি রেখেছিল অনেকদিন। তবে শনিবার ঠিক হয়েছে যে আজ সোমবার বেলা সাড়ে বারোটার সময় বিচারক সঞ্জয়ের সমস্ত বক্তব্য শুনবেন তারপর দুপুরে তার সাজা ঘোষণা হওয়ার কথা রয়েছে। রবিবার সন্ধ্যায় নির্যাতিতার মা জানান বিচারক যা ভাল মনে করবেন সেই শাস্তি তিনি দেবেন, তবে বিচার প্রক্রিয়ার শেষ এখানেই নয়।