অমিত সরকার, কলকাতা: বর্তমানে বাংলা সহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় যে হারে মেয়েদের অসম্মান বেড়ে গিয়েছে সে কারণে সমাজে মহিলাদের সুরক্ষার জন্যই নানারকম ব্যবস্থা গ্রহণ করতে চলেছে কেন্দ্র থেকে রাজ্য সরকার। যেমন বাংলা সহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় ধর্ষণ, মহিলাদের শ্লীলতাহানির ঘটনা দিন দিন যেন বেড়ে চলেছে। এক্ষেত্রে বাদ পড়ছে না নাবালক থেকে বৃদ্ধ। ফলে সমাজে মহিলাদের সুরক্ষা কোথায় তা নিয়ে বারবার প্রশ্ন উঠছে বিভিন্ন মহল থেকে।। এমন অবস্থাতেই এবার বড়সড়ো পদক্ষেপ নিতে উদ্যোগ নিয়েছে স্কুল শিক্ষা দপ্তর। যাতে করে ছোট থেকেই কোনটা ব্যাট টাচ আর কোনটা গুড টাচ সে সম্পর্কে বুঝে নিতে পারে সকলে। বাংলা সহ দেশের বিভিন্ন রাজ্যের স্কুলগুলোতে এই বিষয়গুলি শুরু হয়েছে। তবে এবার এ ব্যাপারে আরো জোড় দিতে চাইছে শিক্ষা দপ্তর।
স্কুল শিক্ষা দপ্তরের বড় উদ্যোগ
আমরা সকলেই পকসো আইন সম্পর্কে কমবেশি জানি। কিন্তু স্কুল পড়ুয়ারা এই সম্পর্কে এখনো অব্দি খুব একটা বেশি জানেনা। ঠিক এই কারণেই এবার থেকে স্কুলের অষ্টম শ্রেণী থেকে বোঝানো হবে শিশুদের ওপর যৌন হেনস্তা বিরোধী পকসো আইনের ব্যাপারে। বিভিন্ন সূত্র খবর অনুযায়ী এমনটাই জানা যাচ্ছে। ২০১৪ সালে পঞ্চম শ্রেণীর সিলেবাস এর গুড টাচ, ব্যাড টাচ বিষয় যুক্ত করা হলেও পকসো আইন সম্পর্কে খুব একটা বেশি কিছু ছিল না। যখন ২০২২ সালে শিশু অধিকার কমিশনের শিক্ষা দপ্তরকে এ বিষয়টি দেখার জন্য বলে তখন থেকেই শুরু হয়ে যায় কাজ। এরপরেও ২০২৩ সালে প্রথমবার সপ্তম শ্রেণীর ছাত্র ছাত্রীরা এই আইন নিয়ে পড়ে। সেই সময়ে একটা আস্ত সিলেবাস দেওয়া হয় যদিও সেই সময়ের ব্যাপারটা নিয়ে শোরগোল হয়নি। কিন্তু এবার অষ্টম শ্রেণীর সিলেবাসে এই আইন নিয়ে পড়ানো হবে এমনই সিদ্ধান্ত নিয়েছে শিক্ষা দপ্তর।
তৈরি নতুন বই
সূত্র খবর অনুযায়ী জানা গিয়েছে, বিভিন্ন স্কুলে ইতিমধ্যেই নতুন বই ছেপে চলে এসেছে। ছাত্র-ছাত্রীদের কাছে এই বিষয়টি যাতে সহজ ভাষায় তুলে ধরা যায় সেই ব্যবস্থাও নাকি করা হয়েছে। যাতে করে ছাত্র-ছাত্রীরা বিষয়টি সহজভাবে বুঝতে পারে তার জন্য যৌন নিগ্রহ বিরোধী বেশ কিছু ছড়া, কবিতা, যোগ করা হয়েছে সেই বইয়ে। সে বইয়ের মধ্যে, প্রতিবাদ থেকে সমস্যায় পড়লে কিভাবে তা থেকে রক্ষা পাওয়া যায় সে বিষয়টিও বলা হয়েছে।
POCSO আইন কী?
এই আইন হলো ভারত সরকারের তরফ থেকে শুরু করা একটি আইন। এটি শিশুদের যৌন নির্যাতনের কার্যকর প্রতিরোধ এবং শিশুদের মধ্যে যৌন নির্যাতন, যৌন নিপীড়ন এবং পর্নোগ্রাফি থেকে সুরক্ষা প্রদান করে। ভারত সরকারের শিশু উন্নয়ন মন্ত্রক এই আইন প্রণয়ন করেন 2012 সালে। বিলে শিশু যৌন নির্যাতনের শ্রেণীবিন্যাস এবং অভিযুক্তদের শাস্তির জন্য কঠোর বিধান রয়েছে। এবার অষ্টম শ্রেণী থেকেই এ বিষয়ের যে বই প্রকাশিত হয়েছে তা পাঠ্যবই হিসেবে পড়ানো হতে পারে, এমনটাই উদ্যোগ নিতে চলেছে স্কুল শিক্ষা দপ্তরের পক্ষ থেকে।