সুমি রায়, কলকাতা: ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দুদিনের জন্য আমেরিকা সফরে গিয়েছিল এবং সেখানে ট্রাম্পের সঙ্গে হোয়াইট হাউসে একটি বৈঠক করেছেন। সেই বৈঠকে বাংলাদেশ সহ নানা রকম কথা আলোচনা হয় তাদের দুজনের। এরই মধ্যে তাদের আলোচনায় উঠে এসেছে বেআইনি অভিবাসন ইস্যু। সেখানে ট্রাম্প মোদিকে বলে যে বেআইনি ভারতীয় অভিবাসীদের আমেরিকা থেকে ফেরত পাঠাতে চায়, তখন মোদিও উত্তর দেয় যে ভারত প্রস্তুত তাদের ফিরিয়ে নিতে। তবে মোদি মার্কিন সফর শেষ করে আসতে না আসতেই, বেআইনি অভিবাসীদের ভারতে ফেরত পাঠাচ্ছেন ট্রাম্প।
অভিবাসী ফিরছে ভারতে
আসলে ট্রাম্প এবং মোদি বৈঠক করেছিলেন আমেরিকায় হোয়াইট হাউসে। সেখানে ট্রাম্প প্রস্তাব রাখেন যে আমেরিকায় ভারতীয় বেআইনি অভিবাসীদের ফেরত পাঠাতে চায়। তখন মোদি ও বলেছে যে ভারত তাদের ফেরত নিতে প্রস্তুত। এ কথোপকথনের পরেই মোদি তার মার্কিন সফর শেষ হতে না হতে বেআইনি অভিবাসীদের ভারতে ফেরত পাঠাচ্ছেন ট্রাম্প। জানা জানা গিয়েছে শনিবার রাতে অমৃতসরে একটি বিমান নামবে আর সেই বিমানে আমেরিকা থেকে ফেরত আসবে ১১৯ জন। তবে তাদের মার্কিন বিমানে করেই ফেরত পাঠানো হবে, নাকি ভারতীয় বিমানে তারা ফিরবেন এখনও নিশ্চয়ই জানা যায়নি।
দ্বিতীয় দফার ফেরত
আমেরিকা থেকে ভারতীয়দের দেশে পাঠাচ্ছে আমেরিকা। তবে দ্বিতীয় দফার বেআইনি অভিবাসীদের তালিকায় অধিকাংশই রয়েছেন পাঞ্জাবের বাসিন্দা। বিভিন্ন খবর সূত্রে জানা গেছে যে ফেব্রুয়ারি ১৬ তারিখেও অর্থাৎ রবিবারেও একাধিক বেআইনি অভিবাসীকে ভারতে ফেরত পাঠানো হবে। সেই তালিকায় থাকতে পারে সেই সমস্ত মানুষ যারা দীর্ঘদিন ধরে প্রয়োজনীয় বৈধ নতি ছাড়াই আমেরিকায় বসবাস করেছিলেন বলে অভিযোগ।
কতজন অভিবাসী ফেরত আসছে
শনিবার রাত ১০ টা থেকে ১১ টার মধ্যে অমৃতসরে নামবে অভিবাসী বোঝায় দ্বিতীয় বিমানটি। বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে যে বেশিরভাগ লোকই রয়েছে পাঞ্জাবের। তবে পাঞ্জাবের ৬৭ জন বাসিন্দা রয়েছে সে তালিকায়, ৩৩ জন হরিয়ানার বাসিন্দা, আর ৮ জন গুজরাটের, ৩ জন উত্তরপ্রদেশের, ২ জন মহারাষ্ট্রের, ২ জন রাজস্থানের, ১ জন গোয়া, ১ জন হিমাচল প্রদেশ এবং ১ জন কাশ্মীরের বাসিন্দা।
আগে কতজন ভারতে ফেরত এসেছে
এর আগেও প্রথমবার যখন আমেরিকা থেকে ভারতে বেআইনি অভিবাসীদের ফেরত পাঠিয়েছিল মার্কিন প্রেসিডেন্ট, তখন ১০৪ জনেকে পাঠিয়েছিল। আমেরিকার সি- ১৭ সামরিক বিমানে চেপে অমৃতসরে নামানো হয়েছিল সকলকে। তাদের মধ্যে বেশিরভাগই ছিল হরিয়ানা গুজরাট এবং পাঞ্জাবের বাসিন্দা।
প্রথমে বিমানে থাকা বেশিরভাগ অভিবাসী বিতর্কিত ডাঙ্কি রুট অবলম্বন করে আমেরিকায় পৌঁছে গিয়েছিলেন বলে অভিযোগ। তারা নাকি বেশিরভাগ জন নিজের জমি বাড়ি বিক্রি করে লক্ষ লক্ষ টাকা দিয়ে আমেরিকার যাওয়ার স্বপ্ন পূরণ করেছিলেন। তবে তাদের ঠকিয়ে টাকা হাতিয়ে নেওয়া এমন এজেন্টদের ইতিমধ্যে গ্রেফতার করা শুরু হয়েছে পাঞ্জাব ও হরিয়ানা সরকার।
প্রথমবার বিমানে আগত অভিবাসীদের হাতে পায়ে শেকল পরিয়ে আনা হয়েছিল। জানা গিয়েছে যে প্রথম বিমানে আগত অভিবাসীদের মতো দ্বিতীয় বিমানে যাত্রীদের হাতে-পায়ে কোন শিকল পোড়ানো থাকবে না। এই শিকল পোড়ানো নিয়ে এর আগে প্রবল বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছিল। যার ফলে বিরোধীরা তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছিল সংসদ অধিবেশন। যার ফলে বাধ্য হয়ে বিদেশ মন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছিলেন।