অমিত সরকার, কলকাতা: আমাদের বিভিন্ন রকম গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্ট গুলির মধ্যে রেশন কার্ডও একটি গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্ট। তবে অন্যান্য ডকুমেন্ট শুধুমাত্র নিজের পরিচয় পত্র হিসেবে ব্যবহার করলেও রেশন কার্ড আমাদের সরকারি খাদ্য সামগ্রী জন্য প্রয়োজন হয়। অর্থাৎ এই রেশন কার্ডের মাধ্যমে সাধারণ মানুষ কেন্দ্রীয় এবং রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে ন্যায্যমূল্যে চাল গম বিভিন্ন খাদ্য সামগ্রী পেয়ে থাকে। তবে এবার এই রেশন কার্ড নিয়ে কেন্দ্র সরকারের পক্ষ থেকে একটি নতুন পরিকল্পনা করছে। জানা যাচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার রেশন কার্ডের সঙ্গে ব্যাংক একাউন্ট লিংক করার পরিকল্পনা চলছে। ফলে মানুষের এতে কি কি সুবিধা বা অসুবিধা হবে এ সমস্ত বিষয়ে আমরা এই প্রতিবেদন থেকে জেনে নেব।
ব্যাংক একাউন্টের সঙ্গে রেশন কার্ড লিঙ্ক
আমরা সকলেই জানি যে আধার কার্ডের সঙ্গে এবং প্যান কার্ডের সঙ্গে নিজেদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট লিংক করাতে হয়। কিন্তু এবার সরকার উদ্যোগ নিতে চলেছে ব্যাংক একাউন্টের সঙ্গে রেশন কার্ড লিংক করার। আসলে এই উদ্যোগের মূল লক্ষ্য ছিল রেশন কার্ডের দুর্নীতি রোধ করা এবং প্রকৃত উপভোক্তাদের সঠিকভাবে সুবিধা প্রদান করা। রেশন ব্যবস্থাকে আরো স্বচ্ছ করে তোলার জন্যই এই পদক্ষেপ নিতে চলেছে সরকার।
নতুন নিয়ম
এক্ষেত্রে যখন নতুন রেশন কার্ড তৈরি করা হবে, তখন ওই পরিবারের প্রধানের আঁধারের পাশাপাশি ব্যাংক একাউন্টের তথ্য সংগ্রহ করা হবে। তবে এমনটা ঠিক কি কারনে করছে সেটা এখনো পরিষ্কার নয়। অনেকেই মনে করছেন যে, সরকার এবার খাদ্য সামগ্রির বদলে সরাসরি সেই রেশনের খাদ্য সামগ্রীর টাকা ভর্তুকি হিসেবে একাউন্টে দিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করছে।
নতুন পরিকল্পনার সুবিধা ও অসুবিধা
আসলে খাদ্য মন্ত্রকের একটি রিপোর্ট অনুযায়ী ফেব্রুয়ারি ২৮ তারিখে কেন্দ্রীয় খাদ্য সচিব এবং রাজ্যগুলির খাদ্য সচিবের মধ্যে একটি বৈঠক হয়। আর সেই বৈঠকেই ২০১৫ সালের রেশন সংক্রান্ত প্রকার পরিবর্তনের প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়েছে। এই প্রস্তাবের ফলে যেমন কিছু সুবিধা আছে, তেমনি আবার কিছু অসুবিধা রয়েছে।
সুবিধা গুলি হল-
- রেশন ব্যবস্থায় আগের তুলনায় আরো স্বচ্ছতা বেশি হবে।
- ভুয়ো রেশন কার্ড বন্ধ করা যাবে।
- ভর্তুকি ব্যবস্থা চালু হলে মানুষ সরাসরি নিজের ব্যাংক একাউন্টে রেশনের অর্থ পাবে।
অসুবিধা গুলি হল-
অসুবিধের ক্ষেত্রে অনেকেই মনে করছেন যে এক্ষেত্রে অসুবিধা হতে পারে রেশন ডিলারদের এবং সাধারণ মানুষের একাংশের। কারণ সরকার সাধারণ মানুষের কাছ থেকে চাল গম ন্যায্য মূল্যে কিনে তারপর রেশনের মাধ্যমে বিলি করে থাকে। চাষীদের কাছ থেকে সরকার চাল এবং গম কেনার ফলে চাষিরা অনেকটাই উপকৃত হন। কিন্তু আগের তুলনায় দেখা গেছে যে দিন দিন সেই চাষিদের কাছ থেকে কেনার পরিমাণ অনেকটাই কমে গেছে। যদি এই ভর্তুকি সিস্টেম চালু হয় তাহলে কিন্তু চাষিরা অনেকটাই অসুবিধায় পড়বে বলে মনে করা হচ্ছে। অন্যদিকে আবার একাংশ মনে করছেন যে যদি রেশন ভর্তুকি চালু হয় তাহলে ও জনসাধারণের একাংশ বিপদে পড়বেন কারণ দিন দিন যে হারে দ্রব্যমূল্যের দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে, তাতে তারা নানা রকম অসুবিধায় পড়তে পারে।