বাংলাদেশকে আদানির সতর্কবার্তা, বিদ্যুৎ বিল শোধের ডেডলাইন আদানির

Published on:

adani power

সুমি রায়, কলকাতা: এর আগেও বাংলাদেশকে বিদ্যুতের বিল দিতে বলেছিল আদানি গোষ্ঠী। তবে বাংলাদেশকে কিছুটা স্বস্তি দিয়ে আদানি এবার বাংলাদেশকে বিদ্যুতের বিল দেওয়ার ডেডলাইন দিয়ে দিল। যত দিন যাচ্ছে ততদিনে খবরের শিরোনামে উঠে আসছে ওপার বাংলা। গত বছর হাসিনার দেশ ছাড়া পরেই সেখানকার অন্তবর্তী সরকার গঠিত হয়েছে নোবেল জয়ী মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে। তারপর থেকে বাংলাদেশের যেন অশান্তি থামছেই না। যত দিন যাচ্ছে তত শহরের পর শহর গ্রামের পর গ্রাম যেন অন্ধকারে এগিয়ে চলেছে। তবে অন্ধকারে যাওয়ার অবশ্যই বড় কারণ হলো আদানি গোষ্ঠীকে বকেয়া পরিশোধ না করা। বাংলাদেশে থেকে আদানি এখনো পর্যন্ত প্রায় কয়েক হাজার কোটি টাকা পায়। তবে এবার অবশেষে সেই বকেয়া টাকা পরিশোধের ডেডলাইন বেঁধে দিল আদানি পাওয়ার। তবে সেই ডেড লাইনের সময় টা অনেকটাই বেশি যার ফলে কিছুটা হলেও স্বস্তি পেতে পারে বাংলাদেশ এটাই মনে করা হচ্ছে।

বকেয়া টাকা ফেরতের ডেডলাইন বেঁধে দিল Adani Power

বিভিন্ন খবর সূত্রে জানা গিয়েছে পিডিবির কাছে তাদের পাওনা ৮৪ কোটি ৫০ লাখ মার্কিন ডলার। ৬ জানুয়ারি পর্যন্ত সময়ে পিডিবিকে সরবরাহ করা বিদ্যুতের বিল হিসেবে এ বকেয়া জমেছে পিডিবির কাছে। আর এর জন্যই বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডকে জুন মাস পর্যন্ত সময় দিয়েছে আদানি গ্রুপ। তবে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডকে লেখা একটা চিঠিতে আদানি পাওয়ার সতর্ক করে দিয়েছে যে, চুক্তির শর্ত অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বিল পরিশোধ না করলে বিলম্ব ফি প্রযোজ্য হবে। আদানি এর আগেও ২০২৩ সালের নভেম্বরের জন্য একটি সময়সীমা নির্ধারণ করেছিল, এই সময়ে পিডিবিকে অর্থ প্রদানে চাপ দেওয়ার জন্য তার একটি ইউনিটও বন্ধ করে দিয়েছিল আদানি।

কত টাকা পাবে Adani Power?

তবে উল্লেখিত সূত্রে কয়লার দাম হিসাব করে আদানি কিন্তু কয়লার প্রকৃত দাম ধরে বিল হিসাব করেছে পিডিবি এবং তাদের হিসাব অনুযায়ী আদানির পাওনা আর ৭০ কোটি ডলারের মতো এখন তারা নিয়মিত বিল পরিশোধ করছে। অর্থাৎ আদানি বকেয়া ৮৪ কোটি ৫০ লাখ দাবি করলেও পিডিবির হিসাব অনুযায়ী বকেয়া রয়েছে প্রায় ৭০ কোটি ডলার।

দীর্ঘদিন ধরেই বকেয়া বিল নিয়ে চিঠি চালাচালি করছে আদানি ও পিডিবি। আদানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি ভারতের ঝাড়খন্ড রাজ্যের গোড্ডায় নির্মিত। আর এখানে উৎপাদিত বিদ্যুৎ 25 বছর ধরে কিনবে বাংলাদেশ। প্রথম ইউনিট থেকে বাণিজ্যিকভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হয় ২০২৩ সালের এপ্রিলে । দ্বিতীয় ইউনিট থেকে বাণিজ্যিক উপাদান শুরু হয় একই বছরের জুনে। ২০১৭ সালে আদানীর সঙ্গে বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি করে পিডিবি। তবে দিনে দেড় হাজার মেগাওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ করেছে এই কেন্দ্রটি। গত নভেম্বরে একটি ইউনিট বন্ধ করার পর বিল পরিষদের সমঝোতা হয়। এরপর বন্ধ ইউনিট চালু করে।বিল পরিশোধে নতুন করে ঋণপত্র (এলসি) খোলে পিডিবি। এখন বিল পরিশোধ করা হচ্ছে। বর্তমানে শীতের জন্য একটি ইউনিট বন্ধ থাকলেও গ্রীষ্ম মৌসুমে শুরু হলে মার্চ থেকে দুটি ইউনিট চালু হতে পারে।

তবে পিডিবি সূত্র অনুযায়ী জানা গিয়েছে যে ৯ জানুয়ারি আদানি ও পিডিবির প্রতিনিধিদের মধ্যে একটি বৈঠক হয় এবং সেই বৈঠকেই বকেয়া বিল নিয়ে আলোচনা হয়। এবং এর ভিত্তিতেই আনুষ্ঠানিক চিঠি দিয়েছে আদানি গ্রুপ পিডিবিকে। ২০২৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ের বকেয়া বিল ৩০ জুনের মধ্যে শোধ করা হলে বিলম্ব ফি মওকুফ করার প্রস্তাব করেছে আদানি।

আসলে ভারতের ঝাড়খণ্ডের ১৬০০ মেগা ওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে আদানি গ্রুপ বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে। তবে এক্ষেত্রে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম ১২ টাকা বা ০.১০০৮ ডলার। এই হার ভারতের অন্যান্য বেসরকারি উৎপাদকের হাড়ের চেয়ে ২৭% বেশি। এছাড়া ভারতের রাষ্ট্রীয় মালিকাধীন কারখানার চেয়ে প্রায় ৬৩ শতাংশ বেশি।

Sumi Roy

সুমি Daily Khabor Bangla ওয়েবসাইটের সহ-প্রতিষ্ঠাতা। সংবাদ জগতে ৩ বছরেরও বেশি অভিজ্ঞতা রয়েছে তাঁর। খেলা এবং প্রযুক্তি নিয়ে নির্ভরযোগ্য ও তথ্যসমৃদ্ধ প্রতিবেদন তৈরিতে সুমি বিশেষ পারদর্শী। তাঁর আন্তরিকতা ও সংবাদ উপস্থাপনার দক্ষতা এই প্ল্যাটফর্মকে সমৃদ্ধ করেছে। পাঠকদের কাছে সঠিক ও বিশ্লেষণমূলক তথ্য পৌঁছে দেওয়াই তাঁর প্রধান লক্ষ্য।