রাজ্য সরকার রাজ্যের মহিলাদের জন্য অনেক রকম সরকারি প্রকল্প চালু করেছে। তবে নতুন বছরের শুরুর আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আনন্দধারা প্রকল্প নিয়ে হাজির হয়েছেন পুনরায়। এবারে রাজ্যের মহিলাদের স্বনির্ভর করার উদ্দেশ্যে একটি নতুন সরকারি প্রকল্প আনা হয়েছে যে প্রকল্পের নাম আনন্দধারা প্রকল্প। কি এই প্রকল্প এই প্রকল্পের মাধ্যমে কি লাভ হবে মহিলাদের এ সমস্ত তথ্য জানতে আমাদের এই প্রতিবেদনটি পড়বেন।
[ez-toc]
আনন্দ ধারা প্রকল্প তৈরীর উদ্দেশ্য
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের জনগণের আর্থিক সুরক্ষার জন্য বিভিন্ন রকম প্রকল্প তৈরি করেছেন। যার মাধ্যমে সাধারণ মানুষ অনেক উপকৃত হচ্ছেন। এবার গ্রামের মহিলারা যাতে নিজস্ব দক্ষতার মাধ্যমে কাজ গুলি করে করতে পারে এবং সে কাজের মর্যাদা দেওয়ার জন্যই সব জায়গায় কাজের প্রতিভাকে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য মুখ্যমন্ত্রী তরফে স্বনির্ভর গোষ্ঠী গড়ে তোলা হয়েছে। স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সঙ্গে যুক্ত মহিলারা যাতে তাদের দক্ষতা তুলে ধরতে পারে তার জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলোকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করবে।
আর্থিক সহায়তার পরিমাণ
সম্প্রতি একটি রিপোর্টে জানা গিয়েছে যে স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলোর আর্থিক সহায়তার পরিমাণ আরো ১০ কোটি টাকা বাড়িয়ে দেওয়া হবে। বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গের প্রায় ১২ লক্ষ এক হাজার স্বনির্ভর গোষ্ঠী রয়েছে। এই গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে প্রায় ১.২১ কোটি পরিবার যুক্ত রয়েছে। এবং সেই স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদেরই আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হবে রাজ্যের তরফ থেকে। যাতে করে মহিলারা তাদের দক্ষতার উপর ভিত্তি করে বিভিন্ন জিনিস গড়ে তুলে নিজের শৈল্পিক সত্তাকে সব জায়গায় প্রকাশ করতে পারে।
স্বনির্ভর গোষ্ঠীর কাজ
স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সঙ্গে যুক্ত মহিলারা যাতে নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারে তার জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিভিন্ন রকম পন্থা চালু করেছে। যেমন গ্রামের মহিলারা বিভিন্ন জিনিসপত্র বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করার মাধ্যমে যে অর্থ উপার্জন হয় সেই অর্থই কিন্তু স্বর্ণের গোষ্ঠীর সঙ্গে যুক্ত মহিলাদেরকে দেওয়া হয়। এছাড়া সরকারি স্কুলের যে ইউনিফর্ম গুলো সিজিএসটির আর বিনামূল্যে দেওয়া হয় সেই ইউনিফর্ম তৈরির দায়িত্ব মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্বনির্ভর গোষ্ঠীর হাতে তুলে দিয়েছেন যাতে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সঙ্গে যুক্ত মহিলারা একটু বেশি আর্থিক স্বচ্ছলতা পেতে পারে। এছাড়া এখন বিভিন্ন আনুষ্ঠানিক মেলাতেও কিন্তু স্বনির্ভর গোষ্ঠীর তৈরি জিনিসপত্র নিয়ে পসরা বসে। সেখানে মহিলাদের নিজের হাতে তৈরি বিভিন্ন রকম জিনিসপত্র বিক্রি হয়।
তেমনি আগামী বছরও রাজ্য সরকারের তরফ থেকে দেশবন্ধু পার্কে ১০ই জানুয়ারি এবং পার্ক সার্কাস ময়দানে ১৪ জানুয়ারি দুটি মেলার উদ্বোধন করা হয়েছে যেখানে এই স্বনির্ভর গোষ্ঠীর তৈরি জিনিসপত্র বিক্রি করা হবে। ২০২৪ সালে অনুষ্ঠিত ২১ টি মেলার মাধ্যমে স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলি প্রায় ১২.২১ কোটি টাকার পণ্য বিক্রি করেছিল। শুধু তাই নয় এর পাশাপাশি বিহার, ঝাড়খন্ড, তেলেঙ্গানা, দিল্লি সহ বিভিন্ন রাজ্যের মেলায় অংশগ্রহণ করেছিল তারা। এছাড়া মহিলারা যদি কোন পণ্য বিক্রি করতে না পারে সেক্ষেত্রে বাড়িতে বসে অনলাইনের মাধ্যমে সেই পণ্য বিক্রি করার জন্য একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি করেছেন।
আর এই সমস্ত স্বনির্ভর গোষ্ঠীর পণ্য ডিজিটাল প্লাটফর্মে তুলে আনার জন্যই রাজ্য সরকার ই বিক্রয় কেন্দ্র চালু করেছে। এর ফলে মহিলারা বাড়িতে বসেই আর্থিক সুরক্ষা পাচ্ছেন এবং নিজেদের পায়ে দাঁড়ানোর জন্য একটি প্ল্যাটফর্ম পেয়েছেন।
অনেকেই মনে করছেন মুখ্যমন্ত্রী যেভাবে বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে নারীদের নিজের পায়ে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছেন তারও একটি অংশ হলো স্বনির্ভর গোষ্ঠী। তাই এসো গোষ্ঠীগুলো যেন আরো বেশি করে আত্মপ্রকাশ করতে পারে এবং আর্থিক নিরাপত্তা পেতে পারে তার জন্য আরও ১০ কোটি টাকা বরাদ্দ করতে চলেছে এই প্রকল্পের মাধ্যমে। এর ফলে গ্রামের মহিলারা আরও বেশি আর্থিক নিরাপত্তা পাবে। যার ফলে তাদের আর্থিক স্বচ্ছলতা বাড়বে।