Blue Aadhar Card: আধার কার্ডের কথা আমরা সকলেই জানি। কিন্তু আমরা অনেকেই জানিনা নীল রঙের আধার কার্ডের কথা। বর্তমানে আধার কার্ড ভারতবর্ষের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রয়োজনীয় নথি বা ডকুমেন্টস। জন্ম থেকে মৃত্যু আর স্কুলে ভর্তি থেকে শুরু করে অন্যান্য সকল কাজে প্রয়োজন হয় এই আধার কার্ডের।
সকলেই আমরা জানি আমাদের যে আধার কার্ড রয়েছে সেটা সাদা কালারের হয়। কিন্তু অনেকেই জানে না যে নীল রঙের আধার কার্ড হয়। তবে প্রশ্ন এটাই যে নীল রঙের আধার কার্ড আসলে কাদের জন্য? নীল রংয়ের আধার কার্ডটি শিশুদের জন্য তৈরি করা হয় যাকে বলা হয় শিশু আধার কার্ড। আর এই আধার কার্ডের রঙ্গ হল নীল। তাই একে নীল আধার কার্ড বা ব্লু আধার কার্ড বলা হয়।
এবার অনেকের মনে প্রশ্ন জাগবে যে এই ব্লু আধার কার্ডটি আসলে কি? এই আধার কার্ডটি কাদের জন্য, এবং এই আধার কার্ডটি বানাতে কি কি ডকুমেন্টস লাগবে, এ সমস্ত একাধিক বিষয়ে জানতে হলে আমাদের এই প্রতিবেদনটি প্রথম থেকে শেষ অবধি পড়বেন। আমাদের এই প্রতিবেদনে আপনাদের যথাযথ প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব।
সুচিপত্র
নীল রঙের আধার কার্ড কি?
আপনি কি কখনো আপনার আধার কার্ডের রং লক্ষ্য করেছেন যে সেটি কি রঙ এর? আসলে আধার কার্ড প্রধানত দুই প্রকার। একটি ছোট শিশুদের জন্য আধার কার্ড আরেকটি বড়দের জন্য আধার কার্ড। বড়দের আধার কার্ড সাদা কাগজে কালো রঙের ছাপা হয় কিন্তু শিশুদের আধার কার্ডের রঙ হয় নীল।
UIDAI যখন শিশুদের জন্য আধার কার্ড জারি করে তখন তার রং নীল হয়। UIDAI – এর মতে নবজাতক শিশুর আধার কার্ড জন্মগ্রহণ শংসাপত্র এবং পিতামাতার আধার কার্ডের মাধ্যমে তৈরি করা হয়। নীল রংয়ের আধার কার্ড সাধারণত ৫ বছর বা তার কম বয়সী শিশুদের জন্য তৈরি করা হয়েছে।
এই নীল রংয়ের আধার কার্ড কিন্তু পাঁচ বছরের পরে আর বৈধ হবে না তখন সেটি অবৈধ হয়ে যাবে। তাই এই আধার কার্ডটি আবার আপডেট করতে হয় আপডেট না হলে এটি নিষ্ক্রিয় হয়ে যায়।
এই আধার কার্ড বানাতে গেলে কিন্তু নবজাতক শিশুর আইরিস স্ক্যান ও আঙ্গুলের ছাপ নেওয়া হয় না। বায়োমেট্রিক এবং জনসংখ্যা সংক্রান্ত তথ্যকে বারো ডিজিট সংখ্যার দ্বারা লিংক করা হয় এই আধার কার্ডের সাথে। এই আধার কার্ডটি নীল রংয়ের হলেও এটি অনেকাংশে বড়দের আধার কার্ডের মতোই।
নীল আধার কার্ড বানানোর প্রয়োজনীয়তা
নীল আধার কার্ডের দ্বারা শিশুর রেজিস্ট্রেশন করানো খুবই প্রয়োজনীয়। বর্তমানে সরকারের তরফ থেকে একাধিক কল্যাণমূলক প্রকল্প এবং বৃত্তি সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। সে সমস্ত প্রকল্প এবং বৃত্তির সুবিধা উপভোগ করার জন্য এই কার্ডের গুরুত্ব অপরিসীম।
নীল আধার কার্ড থাকলে আপনার সন্তান-সন্ততি খুব সহজে বিভিন্ন প্রকল্প এবং বৃত্তির সুবিধা গুলি গ্রহণ করতে পারবে। এছাড়া শিশুদের টিকাকরণ থেকে শুরু করে স্কুলের ভর্তির যাবতীয় কাজ সম্পন্ন করার জন্য এই নীল আধার কার্ডের প্রয়োজন।
এই আধার কার্ডটি শিশুর পরিচয় পত্র এবং অ্যাড্রেস ভেরিফিকেশন এর উদ্দেশ্যে কাজে লাগবে। তাই আপনি যদি এই আপনার বাচ্চার জন্য এই নীল রঙের আধার কার্ডটি না বানিয়ে থাকেন অতি শীঘ্রই আপনি নিকটবর্তী আধার সেন্টারে গিয়ে আপনার শিশুর নাম নীল রঙের আধার কার্ডে নথিভুক্ত করুন।
নীল আধার কার্ড তৈরি আবেদন পদ্ধতি
আপনি আপনার শিশু জন্য নীল রঙের আধার কার্ড তৈরি করবেন ভাবছেন তাহলে আপনি অনলাইন অথবা অফলাইন এই দুই পদ্ধতির মাধ্যমে নীল রঙের আধার কার্ডের জন্য আবেদন করতে পারবেন।
অফ লাইনের মাধ্যমে আবেদন পদ্ধতি
অফলাইনের মাধ্যমে আবেদন করতে হলে নীচে দেওয়া ইন্সট্রাকশন গুলো ফলো করতে হবে।
(১) আপনাকে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস নিয়ে নিকটবর্তী আধার কেন্দ্র বা এনরোলমেন্ট সেন্টারে যেতে হবে।
(২) সেখানে গিয়ে আপনাকে জানাতে হবে যে আপনি আপনার শিশুর জন্য নীল আধার কার্ড (Blue Aadhar Card) তৈরি করতে চান।
(৩) তারপর সেখান থেকে আধার কার্ড তৈরীর জন্য আপনাকে একটি ফর্ম দেওয়া হবে।
(৪) আধার কেন্দ্রের তরফ থেকে যে ফর্মটি দেওয়া হবে সেই ফর্মটি যথাযথভাবে পূরণ করে প্রয়োজনীয় নথির সঙ্গে জমা দিতে হবে।
অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন পদ্ধতি
এবার আমরা দেখে নেব অনলাইন এর মাধ্যমে কিভাবে আবেদন করতে হবে। এই আবেদন আপনি নিজের ঘরে বসেও করতে পারেন অথবা নিকটবর্তী কোন কম্পিউটার পরিষেবার দোকানে গিয়ে আবেদন জানাতে পারেন।
(১) আপনি অনলাইনের মাধ্যমে নীল রঙের আধার কার্ডের আবেদন করতে চাইলে প্রথমে আপনাকে ‘UIDAI’ এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে যেতে হবে।
(২) অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে যাবার পরে ‘My Aadhar’ অপশনই গিয়ে ‘Book an Appointment’ অপশন এ ক্লিক করতে হবে।
(৩) তারপর ‘Aadhar Card’ অপশনটি নির্বাচন করার পর আপনার মোবাইল নম্বর এবং ক্যাপচা দিতে হবে।
(৪) ‘Relationship with Head of Family’ অপশনে গিয়ে শিশুর বয়স (০-৫ বছর) নির্বাচন করতে হবে। এই পদ্ধতি অবলম্বন করে আপনার কাছে এর আধার কেন্দ্রের জন্য একটি সাক্ষাতের তারিখ নির্ধারণ করতে হবে।
প্রয়োজনীয় কী কী ডকুমেন্টস লাগবে
১. শিশুর জন্ম পরিচয় পত্র হিসাবে বার্থ সার্টিফিকেট দিতে হবে।
2. শিশুর মাতা-পিতার আধার কার্ড দিতে হবে।
3. শিশুর পিতামাতার ঠিকানা প্রমাণপত্র হিসেবে বিদ্যুতের বিল, রেশন কার্ড ইত্যাদি দিতে হবে।
4. পাসপোর্ট সাইজ ফটো দিতে হবে (এটি অনেক সময় আধার কার্ড কেন্দ্রেও নিতে পারে)।
গুরুত্বপূর্ণ তথ্য
১. নীল রঙে আধার কার্ডে শিশুর নাম রেজিস্ট্রেশন করানোর জন্য পিতা-মাতার মধ্যে যে কোন একজন অভিভাবক উপস্থিত থাকলেই হবে। দুজনের থাকার আবশ্যকতা নেই।
2. শিশুদের নীল রঙের আধার কার্ডটি কিন্তু শিশুর পিতা অথবা মাতা যে কোন একজনের আধার কার্ডের সঙ্গে লিঙ্ক করা থাকবে।
3. নীল রঙের আধার কার্ড বানানোর জন্য কিন্তু শিশুদের বায়োমেট্রিক ডেটা (Biometric Data) যেমন আঙ্গুলের ছাপ (Finger Print) এবং আইরিস স্ক্যান (Irish Scan) এগুলি দিতে হবে না। কারণ এগুলি পাঁচ বছরের বেশি বয়সীদের জন্য প্রযোজ্য।
4. আধার কার্ড পাওয়ার জন্য নূন্যতম ৬০ দিন সময় অপেক্ষা করতে হয়।
UIDAI হেল্পলাইন নাম্বার
নীল আধার কার্ড আবেদন করার সময় আপনি যদি কোন সমস্যার সম্মুখীন হন তাহলে আপনি ১৯৪৭ এই নম্বরে ফোন করে হেল্প নিতে পারবেন।
সুমি ডেইলি খবর বাংলা ওয়েবসাইটের সহ প্রতিষ্ঠাতা। সুমির সংবাদ জগতে তিন বছরের বেশি অভিজ্ঞতা রয়েছে। সে সরকারি প্রকল্প বিষয় বস্তু সম্পর্কিত খবর তৈরি করতে এবং আপনাদের শেয়ার করতে ভালোবাসেন। সুমি সবসময় চেষ্টা করে আপনাদের সেরা এবং সঠিক খবর প্রদান করার।