ভারত সরকারের পক্ষ থেকে আবারও মক ড্রিলের (Mock Drill) ঘোষণা করা হয়েছে। এর আগে “অপারেশন সিন্দুর”-এর সময় প্রথমবার বড়সড় মক ড্রিল হয়েছিল। এবার সেই ঘটনার পর ফের একটি বড় মাপের সামরিক অনুশীলন অনুষ্ঠিত হতে চলেছে, যা শুধুমাত্র পাকিস্তান সীমান্ত সংলগ্ন রাজ্যগুলোতে হবে।
সামাজিক মাধ্যম X-এ ভারত সরকার জানিয়েছে, ২৯ মে সন্ধ্যায় এই মক ড্রিল অনুষ্ঠিত হবে জম্মু ও কাশ্মীর, পাঞ্জাব, গুজরাট এবং রাজস্থান-এর মতো রাজ্যগুলোতে।
ভারতের দ্বিতীয় বৃহৎ মক ড্রিল
“অপারেশন সিন্দুর”-এর পরে এটিই ভারতের দ্বিতীয় বৃহৎ সীমান্ত মক ড্রিল। প্রথম মক ড্রিল হয়েছিল পহেলগাঁও হামলার পরে। সাম্প্রতিক সময়ে পাকিস্তান সীমান্তে ড্রোন হামলার প্রচেষ্টা ও উত্তেজনার প্রেক্ষিতে এই ড্রিল অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
ভারতীয় সেনাবাহিনীর তথ্য অনুযায়ী, এই ড্রিলের উদ্দেশ্য হল:
- জরুরি পরিস্থিতিতে প্রশাসন ও সাধারণ মানুষের প্রতিক্রিয়া যাচাই করা
- সীমান্তবর্তী এলাকাগুলিতে সুরক্ষা ব্যবস্থার প্রস্তুতি পরখ করা
- যুদ্ধ বা হামলার মতো পরিস্থিতির অনুশীলন
প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য
“অপারেশন সিন্দুর”-এর পরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি পাঞ্জাবের আদমপুর এয়ারবেসে সেনা সদস্যদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। সেখানে তিনি বলেন:
“অপারেশন সিন্দুর শেষ হয়নি, তা এখনো চলছে। ভারত কোনো পারমাণবিক ব্ল্যাকমেল সহ্য করবে না এবং সন্ত্রাসবাদীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ অব্যাহত থাকবে।”
এই বক্তব্যে ভারত সরকারের জাতীয় নিরাপত্তা নীতির দৃঢ়তা ও ভবিষ্যতের প্রস্তুতির ইঙ্গিত মিলেছে।
পাকিস্তানকে সতর্কবার্তা
ভারতের ১৫ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল কার্তিক শেশাদ্রি বলেন:
“অপারেশন সিন্দুর স্থগিত করা হয়েছে, কিন্তু এটি শেষ হয়নি। এর ভয়ঙ্কর রূপ এখনো বাকি।”
এই বক্তব্যকে ঘিরেই সীমান্তে নতুন করে উত্তেজনার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। ফলে সীমান্তবর্তী রাজ্যগুলিতে জরুরি প্রতিক্রিয়া ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।
কারা অংশ নেবে এই মক ড্রিলে?
এই মক ড্রিলে অংশ নেবে:
- স্থানীয় প্রশাসন
- পুলিশ বাহিনী
- সিভিল ডিফেন্স ইউনিট
- স্বাস্থ্য ও জরুরি পরিষেবা দল
বাস্তব পরিস্থিতি অনুকরণ করে এয়ার রেইড সাইরেন, ব্ল্যাকআউট, নাগরিক সরিয়ে নেওয়ার অনুশীলন ইত্যাদি করা হবে।
জম্মু-কাশ্মীরের মতো অঞ্চল যেখানে সংঘর্ষের ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি, সেখানে ইতিমধ্যেই স্থানীয় প্রশাসন আশ্রয় প্রশিক্ষণ শুরু করেছে।
নাগপুর বিমানবন্দরে ইতিমধ্যে মক ড্রিল
সম্প্রতি নাগপুর বিমানবন্দরে সিআইএসএফ এবং বিমানবন্দর কর্মীদের নিয়ে একটি মক ড্রিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। সাধারণ মানুষের মধ্যে এই ড্রিল নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। কেউ মনে করছেন এটি প্রয়োজনীয়, আবার কেউ এটিকে সীমান্ত উত্তেজনার সংকেত হিসেবে দেখছেন।
তবে ভারতের নিরাপত্তা কৌশলের দৃষ্টিকোণ থেকে, এই ধরনের ড্রিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং ভবিষ্যৎ হুমকির জন্য প্রস্তুতি জোরদার করতে অপরিহার্য।