অমিত সরকার, কলকাতা: বুধবার চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য রাজ্যের বাজেট পেশ করেছেন। আর সেই বাজেট শেষের পর দেউচা পাচামি কয়লা খনির বিষয়ে পরিকল্পনা নিয়ে বড় ঘোষণা মমতার বন্দ্যোপাধ্যায়ের। এদিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের বিদ্যুৎ পরিষেবা নিয়ে বড় সুখবর শোনালেন। সেই সুখবর হলো বিদ্যুতের দাম নাকি কমতে চলেছে। এবং মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, আগামী ১০০ বছর ধরে এই প্রকল্পর রাজ্যের বিদ্যুতের চাহিদা পূরণ করবে।
দেউচা পাচামি প্রকল্প নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য
বুধবার বাজেট পেশের পর দেউচা পাচামি প্রকল্প নিয়ে ব্যাখ্যা করতে গিয়ে মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, এর মধ্যে দেউচা পাচামি প্রকল্পের কাজ ইতিমধ্যে শুরু হয়ে গেছে। যেখানে অনেক ছেলে মেয়ে হোম গার্ডের চাকরি পেয়েছে। আদিবাসীদের চাকরি দেওয়া হয়েছে। যারা জমির বদলে টাকা চেয়েছে টাকা দিয়েছি, এলাকার বাড়ি স্কুল কলেজ হাসপাতালে সব দিয়েছি। ক্ষতিপূরণ দিয়েছি।
এখন আমাদের জমিতে কাজ হচ্ছে। তবে আরও কিছু জমি লাগবে, বাকি জমি যারা দেবেন, তারাও টাকা বাড়ির সব পাবেন। যদি এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হয় তাহলে পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম কয়লা শিল্প হবে এই দেউচা পাচামিতে। যদি ওই কয়লা খনি হয় তাহলে এক লক্ষেরও বেশি যুবক-যুবতীরা কাজ পাবে।
এছাড়া কয়লা উৎপাদন হলে বিদ্যুতের দামও এখনকার তুলনায় অনেকটাই কমে যাবে। তিনি আরো জানান যে রাজ্য সরকার বিদ্যুতের দাম না বাড়ালেও সিইএসসি বাড়ায় যে কারণে মানুষকে অনেক ভুগতে হয়। ওটা আমাদের হাতে নেই। তবে যাই হোক এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে বিদ্যুতের দাম অনেক কমে যাবে।
এদিন মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন যে কয়লা খনি থেকে কয়লা উত্তোলন একবার শুরু হয়ে গেলে রাজ্যে বিদ্যুতের দাম অনেক কমে যাবে। এবং আগামী প্রজন্মকে লোডশেডিং এর সমস্যায় যাতে ভুক্তে না হয় সে ব্যবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে কয়লা খনি।
প্রশাসনের পদক্ষেপ
প্রথমে এই কয়লা খনি প্রকল্প শুরু করতে গিয়ে অনেক রকম সমস্যা সম্মুখীন হতে হয়েছে আধিকারিকদের। কারণ সেইখানকার স্থানীয় বাসিন্দারা পরিবেশ নষ্ট এবং গাছপালা ধ্বংসের সংশয় নিয়ে বিভিন্ন অভিযোগ তুলেছিল। এছাড়াও জমিদাতাদের যথাযথ পুনর্বাসন, চাকরি, আর্থিক সাহায্যে প্রশাসনিক আশ্বাস থাকলেও কয়লা খনির জন্য এলাকার বাসিন্দারা অনেকেই আপত্তি তুলেছিলেন।
তাদের দাবি ছিল কয়লা উত্তোলন করা হলে এলাকার পরিবেশ নষ্ট হবে। তবে প্রশাসনের লাগাতার প্রচারের পর সে সমস্যা মিটেছে অবশেষে সেখানে শুরু হয়েছে কাজ। গত ৬ ফেব্রুয়ারি থেকে কাজ শুরু হয় এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম কয়লা খনিতে।
বিশেষজ্ঞদের মতে এই প্রকল্প রাজ্যের বিদ্যুৎ উৎপাদন শিল্পে বিপ্লব নিয়ে আসবে। এছাড়া এ প্রকল্পের মাধ্যমে সেখানকার স্থানীয় অর্থনীতি আরো উন্নত হবে এবং হাজার হাজার মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে। এছাড়া এই প্রকল্প ও রাজ্যের উন্নয়নের পথে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
তবে সাধারণ মানুষ এই প্রকল্পের কথা শুনে অনেকটাই খুশি হয়েছেন। কারণ দিন দিন যে হারে জিনিসের মূল্য বৃদ্ধি হচ্ছে, তারপর ইলেকট্রিক বিল এর দাম যে হারে দিন দিন বেড়ে চলেছে, তাতে করে মধ্যবিত্ত মানুষের পক্ষে স্বচ্ছল ভাবে বেঁচে থাকা কঠিন হয়ে পড়েছে। যদি এই প্রকল্পের মাধ্যমে ইলেকট্রিকের দাম কমে তাহলে গরিব থেকে শুরু করে মধ্যবিত্ত সকলেই খুবই উপকৃত হবে।