আগে সাধারণ মানুষ রেশন দোকান থেকে একটি সর্বনিম্ন এবং নির্দিষ্ট মূল্যে জিনিসপত্র কিনে নিতো। কিন্তু কোভিড মহামারী চলাকালীন খাদ্য সুরক্ষা আইনের আওতায় নাগরিকদের বিনামূল্যে রেশন দেওয়া শুরু করেছিলেন মোদী সরকার। গোটা দেশ মিলে প্রায় সব জনগণকে বিনামূল্যে রেশন দেওয়া হচ্ছে। তবে নয় ডিসেম্বর সোমবার কেন্দ্রের এই উদ্যোগ নিয়েই শীর্ষ আদালত তুলেছে প্রশ্ন। বিচারপতি সূর্যকান্ত এবং বিচারপতি মনমোহনের বেঞ্চের প্রশ্ন, ‘কতদিন ধরে এই ফ্রি রেশন দেওয়া হবে। এর বদলে কাজের সুযোগ তৈরি এবং সক্ষমতার বৃদ্ধি প্রয়োজন বলে জানিয়েছে আদালত।
বিনামূল্যে রেশন দেওয়ার কারণ
২০২০ সালে কোভিড মহামারী চলাকালীন পরিযায়ী শ্রমিক এবং দরিদ্র মানুষের সমস্যা ও দুর্দশার বিষয়ে একটি মামলা গ্রহণ করেছিল সুপ্রিম কোর্ট। এদিন সেই মামলার শুনানি ছিল এবং সেই শুনানিতেই এক এনজিও এর পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন প্রখ্যাত আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ। তিনি জানান সরকারের ই-শ্রম পোর্টালে নিবন্ধিত সমস্ত পরিযায়ী শ্রমিকদের বিনামূল্যে রেশন দেওয়ার জন্য নির্দেশ জারি করা দরকার। এরপরই নানা রকম আলোচনার পর ঠিক হয় সমস্ত মানুষদের বিনামূল্যে রেশন দেওয়া হবে।
কতজন মানুষকে ফ্রি রেশন দেওয়া হয়
আদালতের পক্ষ থেকে জানতে চাওয়া হয়েছে যে বর্তমানে কতজন মানুষকে বিনামূল্যে রেশন দেওয়া হচ্ছে? এই প্রশ্নের পর কেন্দ্রীয় পক্ষ থেকে উপস্থিত সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা এবং অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল ঐশ্বর্য ভাবি জানান যে বর্তমানে প্রায় ৮১ কোটি মানুষ এই সুবিধা পাচ্ছেন। এই উত্তর শোনার পর বিস্মিত হয়ে যান বিচারপতি সূর্যকান্ত এবং বিচারপতি মনমোহন। এর প্রতি উত্তরে বিচারপতি সূর্যকান্ত বলেন, তার মানে শুধুমাত্র করদাতারাই বাদ পরেছে। কতদিন ধরে এই ফ্রি দেওয়া সম্ভব? কেন তাদের ফ্রি জিনিস না দিয়ে কাজের সুযোগ করে দেওয়া হচ্ছে না? কেন কর্মসংস্থান এবং সক্ষমতা তৈরির চেষ্টা করছি না?
প্রখ্যাত আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণের বক্তব্য
প্রখ্যাত আইনজীবী প্রশান্ত ভুষণ জানান দেশের সমস্ত পরিযায়ী শ্রমিক যাতে কেন্দ্রের দেওয়া বিনামূল্যে রেশন পায় তার জন্য শীর্ষ আদালতেই বিভিন্ন সময়ে রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল গুলিতে তাদের সকলের জন্য রেশন কার্ড দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। তিনি আরো জানান যে শীর্ষ আদালতে সর্বশেষ আদেশে বলা হয়েছিল যাদের রেশন কার্ড নেই কিন্তু ই-শ্রম পোর্টালে নিবন্ধন আছে তারাও যেন বিনামূল্যে এসব পায়।
বিচারপতি সূর্যকান্ত বলেন
তিনি বলেন যে এটাই সমস্যা যে মুহূর্তে থেকে আমরা রাজ্যগুলিকে সমস্ত পরিযায়ী শ্রমিকদের কর্মীদের বিনামূল্য রেশন দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছি তারপর থেকে আর কাউকে এখানে দেখাই যায় না। জনগণকে খুশি করার জন্য রাজ্যগুলি যত খুশি রেশন কার্ড জারি করছে তারা খুব ভালো করেই জানে বিনামূল্যে রেশন দেওয়ার দায় কেন্দ্রের।
প্রশান্ত ভূষণ বলেন
প্রখ্যাত আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ জানিয়েছেন কেন্দ্র বর্তমানে ২০১১ সালের জনগণনার তথ্যের অপর ভিত্তি করেই এই সুবিধা দিচ্ছে ২০২১ সালে যদি জনগণনা করা হত তাহলে পরিযায়ী শ্রমিকদের সংখ্যাটা আরো অনেক বেশি হত। তবে বেঞ্চের পক্ষ থেকে তাকে এ বিষয়ে কেন্দ্র রাজ্যের মধ্যে বিভাজন করতে নিষেধ করেছে। এছাড়া তুষার মেহতা জানান যে কোভিড পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখেই শীর্ষ আদালত আগে এই নির্দেশ গুলো দিয়েছিল, সেই সময় তাদের অনেক খারাপ দুর্দশা ছিল তাই। তিনি আরো বলেন সরকারকে আইন মেনে চলতে হয় এর বাইরে যাওয়ার উপায় নেই।
শুনানির তারিখ
বিচারপতি সূর্যকান্ত জানান, পরিযায়ী শ্রমিকদের করা মামলায় একটি বিশদ শুনানির খুবই প্রয়োজন। আগামী বছরের জানুয়ারীর ৮ তারিখে এই মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে।
অমিত ডেইলি খবর বাংলার প্রতিষ্ঠাতা এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা। ৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে তিনি সংবাদ জগতের সঙ্গে যুক্ত। পশ্চিমবঙ্গের এবং ভারতের সংবাদ সাম্প্রতিক ঘটনাবলী নিয়ে সঠিক এবং নির্ভরযোগ্য তথ্য পরিবেশন করতে অমিত সর্বদা উদ্যমী। সংবাদ সংগ্রহ এবং তা পাঠকদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার প্রতি তার আগ্রহ এবং নিষ্ঠা এই প্ল্যাটফর্মকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। সেরা এবং নির্ভুল খবর প্রদানই তার প্রধান লক্ষ্য।