পশ্চিমবঙ্গ সরকার রাজ্যে তরুণের স্বপ্ন প্রকল্পের (Taruner Sapna Prakalpa) মাধ্যমে একাদশ এবং দ্বাদশ শ্রেণীর সমস্ত ছাত্রছাত্রীদের ট্যাব কেনার জন্য টাকা দেয়। দুর্গা পুজোর আগেই সেই টাকা সমস্ত ছাত্র-ছাত্রীদের ব্যাংক একাউন্টে দিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে এরই মধ্যে প্রায় বেশ কিছু সংখ্যক ছাত্রছাত্রী এই ট্যাব কেনার টাকা পায়নি অর্থাৎ সেই টাকা নাকি ট্রান্সফার হয়ে যাচ্ছে অন্যদের একাউন্টে। একাধিক ছাত্রছাত্রীর সঙ্গে এমন ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটেছে। শুধু একটি স্কুল নয় এমন একাধিক স্কুলের এই অভিযোগ সামনে এসেছে, সেই কারণেই ছাত্রছাত্রীরা ট্যাব কেনার টাকা পায়নি। তাই রাজ্য সরকার একটি খুশির খবর নিয়ে চলে এসেছে, এবার সেই চিন্তা দূর করতেই বড় সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য সরকার।
মোট ৯২ জন পড়ুয়ার একাউন্টের টাকা উধাও!
জানা গিয়েছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার মোট চারটি স্কুলে ছাত্রছাত্রীদের ব্যাংক একাউন্ট থেকে এই ট্যাব কেনার টাকা অন্য একাউন্টে ট্রান্সফার হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এই মুহূর্তে পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় মোট ৬৪ জন পড়ুয়ার টাকা গায়েব হয়ে গিয়েছে। মনে করা হচ্ছে এই কাজটি সাইবার অপরাধীদেরই কাজ তারাই ‘বাংলা শিক্ষা’ পোর্টালকে হ্যাক করে ছাত্রছাত্রীর নাম এবং অ্যাকাউন্ট নম্বর সরিয়ে নিজেদের অ্যাকাউন্ট নম্বর বসিয়ে দিচ্ছে। তাহলে হিসেব করে দেখা যাচ্ছে যে যদি ৬৪ জন পড়ুয়ার সঙ্গে এই ঘটনা ঘটে তাহলে মাথাপিছু ১০ হাজার টাকা অর্থাৎ মোট ৬ লাখ ৪০,০০০ টাকা এই মুহূর্তে হ্যাকারদের একাউন্টে ঢুকেছে।
পূর্ব বর্ধমানের দুটি স্কুলেও এই একই ঘটনা ঘটেছে। এক্ষেত্রে মোট ২৮ জন ছাত্রের একাউন্টের টাকা অন্য কোথাও ট্রান্সফার হয়ে গিয়েছে। এক্ষেত্রে হিসাব করলে দেখা যাবে যে ২৮ জন ছাত্র মাথাপিছু ১০০০০ করে টাকা যদি চুরি হয় তাহলে মোট ২ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা হ্যাকারদের একাউন্টে চলে গেছে। এই টাকা না পাওয়ার কারণে ছাত্র-ছাত্রীদের মনে দেখা দিয়েছে অসন্তোষ।
সব মিলিয়ে মোট ৯২ জন পড়ুয়ার সঙ্গে ঘটেছে এমন ঘটনা। সেই সমস্ত স্কুলের পক্ষ থেকে গোটা বিষয়টি জানানো হয় ডিআই, অতিরিক্ত জেলাশাসক ও ডিপিও-কে। পাশাপাশি ডিআই এর পরামর্শ অনুযায়ী পুলিশের সাইবার ক্রাইম থানাতেও অভিযোগ দায়ের করা হয়। আর যে সমস্ত ছাত্রছাত্রীদের একাউন্টের টাকা হ্যাক করে অন্য একাউন্টে চলে গিয়েছে, পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পক্ষ থেকে সেই সমস্ত ছাত্রছাত্রীদের পুনরায় টাকা দেওয়ার বড় উদ্যোগ নিতে চলেছে রাজ্য সরকার।
আবার ছাত্র-ছাত্রীদের বরাদ্দ টাকা দেওয়া হবে!
সূত্রের মাধ্যমে জানা গেছে যে রাজ্য সরকার টাকা না পাওয়া শিক্ষার্থীদের জন্য শীঘ্রই সেই টাকা বরাদ্দ করবে। যাতে সে সমস্ত ছাত্রছাত্রীরাও খুব শীঘ্রই ট্যাব কিনে তাদের পড়াশোনার কাজে ব্যবহার করতে পারে। শিক্ষা দপ্তরের এক আধিকারিক জানিয়েছেন যে অধিকাংশ অ্যাকাউন্ট ইতিমধ্যেই টার্গেট করা হয়েছে এবং রাজ্য পুলিশের সাইবার প্রতারণার গোটা বিষয়টি তদন্ত করে দেখছে, এছাড়া অর্থ বিভাগও খতিয়ে দেখছে। তবে খুশির বিষয় এই যে টাকা না পাওয়া ছাত্রছাত্রীরা খুব শীঘ্রই ক্ষতিপূরণ হিসেবে সেই টাকা পেয়ে যাবে।
আরও পড়ুন: বিনামূল্যে ২ কাঠা করে জমি দিচ্ছে সরকার! কিভাবে আবেদনের পদ্ধতি? জানুন বিস্তারিত
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শিক্ষা দপ্তর এবং প্রধান শিক্ষকদের মনে একটা চাপা উত্তেজনা ক্রমশ বেড়ে চলেছে। প্রধান শিক্ষকদের সংগঠন থেকে ইতিমধ্যেই স্পষ্ট করে বলা হয়েছে যে এই ঘটনা তদন্ত প্রক্রিয়ার মধ্যে তাদের উপর যাতে কোন অন্যায়ভাবে কোন দায়ভার চাপানো না হয়। ঘটনার জন্য নির্দিষ্ট দায়িত্ব থাকা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে সঠিক ব্যবস্থা নেওয়া উচিত বলে তারা দাবি করে চলেছেন।
সুমি ডেইলি খবর বাংলার সহ-প্রতিষ্ঠাতা এবং একজন অভিজ্ঞ সংবাদ প্রণেতা। সংবাদ জগতে তার ৩ বছরেরও বেশি অভিজ্ঞতা রয়েছে। আন্তর্জাতিক বিষয়াবলি, রাজনীতি, এবং সরকারি প্রকল্পের উপর নির্ভরযোগ্য ও তথ্যসমৃদ্ধ প্রতিবেদন তৈরি করতে সুমি বিশেষ পারদর্শী। তার কাজের প্রতি আন্তরিকতা এবং সংবাদ উপস্থাপনার দক্ষতা এই প্ল্যাটফর্মকে আরও সমৃদ্ধ করেছে। পাঠকদের কাছে সঠিক ও বিশ্লেষণমূলক তথ্য পৌঁছে দেওয়াই তার প্রধান লক্ষ্য।