সুমি রায়, কলকাতা: আমরা সকলেই জানি যে ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে একটি যুদ্ধ হওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। তবে যুদ্ধ কতটা কি হবে তা এখনো বোঝা না গেলেও ভারতের নিয়ন্ত্রণ রেখা ও সীমান্তের ওপারে সন্ত্রাসী শিবিরে হামলা করল ভারত। বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা গেছে যে পাকিস্তানের বাহাওয়ালপুরে রাতের বেলায় ভারতের বিমান হামলায় জৈশ- ই- মোহাম্মদের প্রধান মৌলানা মাসুদ আজহারের পরিবারের ১০ জন সদস্য নিহত হয়েছেন। হামলার পর এক বিবৃতিতে দাবি করা হয়েছে যে এই হামলায় নিহতদের মধ্যে মাসুদ আজহারের চার সহযোগী ও নিহত হয়েছেন।
হামলা কখন চালানো হয়েছিল?
আসলে ভারতের পক্ষ থেকে গতরাতে নয়টি সন্ত্রাসী লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালানো হয়েছিল। যার মধ্যে বাহাওয়ালপুরের জামিয়া মসজিদ সুবহানআল্লাহও ছিল। আর অন্যান্য পাকিস্তানের অন্তত তিনটি এবং পাক অধিকৃত কাশ্মীরের আরো পাঁচটি স্থান অন্তর্ভুক্ত ছিল।
কে এই মাসুদ আজহার?
আসলে মাসুদ আজহার পাকিস্তান ভিত্তিক জইশ-ই-মোহাম্মদ সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর প্রতিষ্ঠাতা। তার বয়স ৫৬ বছর। তার গঠিত দল ভারতের বেশ কয়েকটি সন্ত্রাসী হামলা চালিয়েছে, যার মধ্যে ২০১৬ সালের পাঠানকোট বিমান ঘাঁটি আক্রমণ এবং ২০১৯ সালের পুলওয়ামা হামলা অন্তর্ভুক্ত। এছাড়া তিনি ২০১৬ সালে আফগানিস্তানের মাজারী শরীফে ভারতীয় কনস্যুলেটে হামলার পরিকল্পনা করেছিলেন। এছাড়া ২০০১ সালের সংশোধ হামলা এবং ২০০৮ সালের মুম্বাই হামলার সাথেও জড়িত ছিলেন। এই ওয়ান্টেড সন্ত্রাসী একসময় ভারতীয় সংস্থাগুলির হেফাজতে ছিল কিন্তু এয়ার ইন্ডিয়া IC814 হাইজ্যাকের পর তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল।
আজহারের পরিবারের কে কে মারা গিয়েছে?
বিভিন্ন সূত্রে জানা যাচ্ছে যে বাহাওয়ালপুরের হামলায় মাসুদ আজহারের পরিবারের যে সমস্ত মানুষ মারা গেছেন তাদের মধ্যে রয়েছে আজহারের বড় বোন, তার স্বামী, এক ভাগ্নে, তার স্ত্রী, এক ভাগ্নে, এবং বর্ধিত পরিবারের পাঁচ সন্তান রয়েছে। তবে তার পরিবারের এই মৃত্যুর ঘটনার প্রেক্ষিতে আজহার বলেন মৃত্যুর জন্য তার কোন অনুশোচনা বা হতাশা নেই। বরং একটি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, তিনি তার পরিবারের সদস্যদের সাথে মারা যেতে চেয়েছিলেন।
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া ও পাকিস্তানের ভূমিকা
জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ মাসুদ আজহারকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী হিসেবে ঘোষণা করেছে। তবে পাকিস্তান সরকার তার উপস্থিতি অস্বীকার করে আসছে, যদিও তিনি প্রকাশ্যে বক্তৃতা দিয়ে ভারতের বিরুদ্ধে হামলার হুমকি দিয়ে থাকেন।